সপ্তম দফায় ৬১৩ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ তাদের নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
এর আগে শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ও বিকেলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির থেকে ১৪টি বাসে করে চট্টগ্রাম এসে পৌঁছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গারা।
চট্টগ্রামের জেটিঘাট থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এসব রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে শুক্রবার দুপুর একটার দিকে ৯টি বাস এবং বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছয়টি বাস রোহিঙ্গাদের নিয়ে চট্টগ্রামের নেভাল ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়।
এর আগে ২০২০ সালের চার ডিসেম্বর প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় এক হাজার ৮০৪ জন।
চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় তিন হাজার ২৪২ জন, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ দফায় তিন হাজার ১৮ জন, তিন ও চার মার্চ পঞ্চম দফায় চার হাজার ২১ জন এবং এক ও দুই এপ্রিল চার হাজার ৩৭২ জনকে ভাসানচরে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সবমিলে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে বসবাস করছে। ওই বছরের নভেম্বরে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
ঘর তৈরীর পর গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় স্বেচ্ছাগামী প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছলে তাদেরকে দালানের একেকটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হয়।